বশির আল–মামুন চট্টগ্রাম ব্যুরো : একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় চট্টগ্রামের রাউজানের সাবেক এমপি এ বি এম ফজলে করিমের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এর আগে চট্টগ্রাম নগর ও জেলা মিলিয়ে মোট পাঁচ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
এদিকে ফজলে করিমের শুনানিকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার ভোর ৫টা থেকে আদালত চত্বরের আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা গ্রহণ করা হয়। মোতায়ন করা হয় বিপুল পুলিশ। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তাকে আদালতে তোলা হয়।
জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হারুন রাউজানের মুনিরিয়া যুব তাবলীগের দায়ের করা একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় ফজলে করিম চৌধুরীর দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ পর্যন্ত ফজলে করিমকে নগরের পাঁচলাইশ, চকবাজার ও চান্দগাঁও থানার তিনটি মামলা এবং রাউজান থানার দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় বলে জানিয়েছে আদালত সূত্র।
ফজলে করিম চৌধুরী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে চট্টগ্রাম-৬ আসনে ২০০১, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর মধ্যে ২০১৪ সালে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে গ্রেপ্তার করা হয় ফজলে করিম চৌধুরীকে।
এদিকে আদালত ভবনের চারদিকেই কড়া নিরাপত্তা, ছিল পুলিশি পাহারাও। কারণ রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে আদালতে হাজির করা হবে—ছিল এমন খবর। কিন্তু বাধা অতিক্রম করেই আদালত ভবনে ঢুকে পড়েন ১০ থেকে ১২ জন যুবক। এ সময় তারা নানা স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে তারা মারতে তেড়ে যান সাবেক এই সংসদ সদস্যকে। পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতিও হয় তাদের। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
এ সময় কয়েকজন যুবক পুলিশকে ধাক্কা মেরে ফজলে করিম চৌধুরীর ওপর হামলা করতে দৌঁড়ে পুলিশের প্রিজন ভ্যানের দিকে এগিয়ে যান। কিন্তু পরে আবার পুলিশের বাধায় তারা পিছু হটে। এ নিয়ে আদালত চত্ত্বরে হট্টগোল লেগে যায়।
মারতে উদ্যত হওয়া এক ব্যক্তি বলেন, ‘ফজলে করিম সন্ত্রাসীদের গডফাদার। সে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক নুরুল আলম নুরুকে গুম করে হত্যা করে। প্রবাসী মুসা থেকে শুরু করে কম হলেও একডজন গুম ও খুনের সাথে সে জড়িত। ব্যক্তিগতভাবে সে একটি বাহিনী গঠন করে ভিন্নমত পোষণকারীদের জোর করে তুলে নিয়ে যেত। শিক্ষকদের জোরপূর্বক পদত্যাগ করিয়েছে। আমরা ফজলে করিম জুইন্নার ফাঁসি চাই।’
কক্সবাজারের চকরিয়ায় ডাকাতি প্রতিরোধে অভিযানকালে ছুরিকাঘাতে সেনা বাহিনীর লেফটেন্যান্ট নিহত
বশির আল–মামুন, চট্টগ্রাম : কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় যৌথ বাহিনীর অভিযানের সময় ডাকাতের ছুরিকাঘাতে তানজিম ছারোয়ার নির্জন (বিএ-১১৪৫৩) নামের সেনাবাহিনীর একজন লেফটেন্যান্ট নিহত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪সেপ্টেম্বর) ভোর রাত ৪ টার দিকে উপজেলার ডুলহাজরা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া এলাকায় এ ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। নিহত ল্যাফটেন্যান্ট তানজিমের বাড়ী টাঙ্গাইল জেলায়। সে চকরিয়ায় সেনা ক্যাম্পে যৌথ বাহিনীর সেনা অভিযানে কর্মরত ছিলেন।
নির্জন পাবনা ক্যাডেট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি থেকে ৮২তম দীর্ঘ মেয়াদি কোর্স সম্পন্ন করেন। এরপর গত ০৮ জুন ২০২২ তারিখে আর্মি সার্ভিস কোরে (এএসসি) কমিশন লাভ করেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, ওই দিন রাত ৩ টার দিকে পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামে ডাকাতির খবর আসে। ঘণ্টা খানেকের মধ্যে চকরিয়া আর্মি ক্যাম্পের সদস্যরা ভোর রাত ৪ টার দিকেসেখানে পৌঁছায়।
অভিযানের সময় ৭-৮ সদস্যের ডাকাত দলটির কয়েকজনকে তাড়া করেন লেফটেন্যান্ট নির্জন। এ সময় ডাকাতরা নির্জনের ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করলে প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে মালুমঘাট মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চকরিয়া থানার ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়া।
আইএসপিআর জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে ১টি দেশি বন্দুক ও ৬ রাউন্ড গুলাবারুদ নিয়ে জিয়াবুল ও বেলাল সহ ৩ ডাকাতকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া ডাকাত সন্দেহে আটক করা হয়েছে আরও ৩ জনকে।
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় বন্য হাতির আক্রমণে নারীসহ ২ জন নিহত
বশির আল–মামুন চট্টগ্রাম ব্যুরাে : চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় বন্যহাতির আক্রমণে নারীসহ দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, বৈরাগ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গুয়াপঞ্চক গ্রামের শাহ আহম্মদ বাড়ির আবুল কাশেম ওরফে মো. দুলাল ও একই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের খোশাল তালুকদারের বাড়ির মো. আক্তারের স্ত্রী রেহেনা আক্তার (৩৮)।
বৈরাগ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম জানান, রাত ৯টার দিকে কয়েকটি বন্য হাতি গুয়াপঞ্চক এলাকায় নেমে পড়ে।
হাতিগুলো চলাচলের রাস্তা না পেয়ে আক্রমণাত্মক হয়ে লোকজনকে তাড়া করে। ওই সময় একটি হাতি আশ্রয়ণ প্রকল্পের বসবাস করা এক কৃষককে আক্রমণ করে। এতে গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বৈরাগ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম বাংলানিউজ জানান, ৩টি হাতি পাহাড় থেকে নেমে এসেছিল।
এর মধ্যে ২টি হাতিকে স্থানীয়রা তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। হাতি আসার খবরে স্থানীয় উৎসুক জনতা তাদের দেখতে ঘর থেকে বেরিয়ে আসলে পেছন থেকে একটি হাতি এসে আক্রমণ করে। এতে রেহেনা নামে এক নারীর মৃত্যু হয়। এছাড়াও আরও দুই জন গুরুতর আহত হয়েছে।
Leave a Reply